বিগত দিনে বাংলাদেশে মৌলবাদের প্রভাব ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনাও বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে কট্টরপন্থীদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। আজকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে সম্প্রীতি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ তিনি। সেখানে বলেন,দেশের অখণ্ডতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। হিংসা বিদ্বেষ চাই না।’
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘এই দেশ সবার। সম্প্রীতি রক্ষা করে একত্রে বসবাস করতে হবে। নিজে জীবনের একটি দীর্ঘ সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে কাটিয়েছি। সেখানে শান্ত প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।কের এই অনুষ্ঠান সাম্রদায়িক সম্পতির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এখানে সম্প্রী মিলন ঘটেছে। আমরা সবসময় ধর্ম, ব নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই সম্প্রীায় রেখে বসবাস করছি এবং একসঙ্গে থাকার জন্য কাজ করছি ভিন্ন মত থাকলেও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
উল্লেখ্য, অতীতে চট্টগ্রামে চাকমা ও অন্যান্য উপজাতিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। আদিবাসী বৌদ্ধদের ওপর সেনাবাহিনীর নিপীড়নের অভিযোগও শোনা গিয়েছিল। একই সময়ে চট্টগ্রাম শহরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সেনাবিনীর অত্যাচারের অভিযোগও সামনে আসে। এরই মধ্যে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে কট্টরপন্থী ইসলামিক সংগঠনগুলির কার্যক্রম ও তৎপরতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ উপজাতিদের অসন্তোষের প্রসঙ্গ তুলে সম্প্রতি ভারতের রাজনীতিবিদ প্রদ্যোৎ মাণিক্য দেববর্মা বাংলাদেশ বিভক্ত করার হুমকি দেন। তিপ্রা মোথার প্রতিষ্ঠাতা দাবি করেন যে, ১৯৪৭ সাল থেকেই আদিবাসীরা ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ি মানুষ ভারতের অংশ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেই সময় চট্টগ্রাম বন্দর হারানো ভারতের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত না বলে মন্তব্য করেন প্রদ্যোৎ। পাশাপাশি, ইউনুসকে সতর্ক করে প্রদ্যোৎ স্মরণ করিয়ে দেন যে, “চট্টগ্রাম বন্দর ত্রিপুরা থেকে খুব দূরে নয়।” এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মধ্য দিয়েই ভারতকে ‘পথ তৈরি করার’ পরামর্শ প্রদ্যোৎ এর ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চিন সফরে উত্তরপূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ইউনুস। তিনি বলেছিলেন, ‘উত্তরপূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছানোর কোনো উপায় নেই। এই অঞ্চলে আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে এবং চিনানীতির সম্প্রসারণ হতে পারে।’ সেই প্রেক্ষাপটেই প্রদ্যোৎ সেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন । এদিকে, মায়ানমারের আরাকান আর্মি এবং চিন বিদ্রোহীরাও বাংলাদেশের বৌদ্ধদের ওপর এই অত্যাচারের ঘটনাকে ভালো চোখে দেখে না। এর ফলস্বরূপ বাংলাদেশ চাপের মধ্যে থাকতে পারে। এই সব ঘটনার মাঝে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মন জয়ের চেষ্টা চালান জেনারেল ওয়াকার।