ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে মামলা, শুনানির সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশের হাইকোর্ট !
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইসকনকে (ISKCON) নিষিদ্ধ করার দাবিতে দেশটির হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারির আবেদন করা হয়েছে আদালতে। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারের ঘটনায় এই দুই শহরে বেশ কয়েকটি অশান্তির ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং ইসকনের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ। ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তাঁর গ্রেফতার হন। জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে, এবং বর্তমানে তিনি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে আছেন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, বন্দি অবস্থায় তাঁর ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষিত রাখতে হবে। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারের ঘটনা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারের পরে বাংলাদেশে ইসকনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা চিন্ময়কৃষ্ণের অনুসারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে প্রধানত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা পথে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হাই কোর্টে ইসকনের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারির আবেদন করা হয়েছে। আদালত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ইসকনকে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
মঙ্গলবার চিন্ময় কৃষ্ণকে আদালত থেকে বের করার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আইনজীবীদের সাথে তার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় একজন আইনজীবী নিহত এবং পুলিশসহ ৩৭ জন আহত হন। আইনজীবীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই হিংসার নিন্দা জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে অশান্তির মধ্যে কিছু ধর্মীয় সংগঠন মিলে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ গঠন করে। চিন্ময় কৃষ্ণ এই মঞ্চের মুখপাত্র নির্বাচিত হন। তার ডাকে বাংলাদেশের শহিদ মিনার, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার সংখ্যালঘু সমাবেশে যোগ দেন। চট্টগ্রামে সমাবেশের পর এক স্থানীয় বিএনপি নেতা তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করেন। এই মামলায় সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ বেড়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি পোড়ানো এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরও পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়নি। তবে ইউনূস বারবার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।