হাইকোর্টের রায় খারিজ বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টে,৯৩ শতাংশ আসন উন্মুক্ত করে দিলো সাধারণের জন্য!
বাংলাদেশের হাই কোর্টের দেওয়া সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংক্রান্ত রায়কে খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সংরক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার করা হবে, এমন রায় দিয়েছেন শীর্ষ আদালত।
২০১৮ সালে শেখ হাসিনার সরকারের গৃহীত সংরক্ষণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে গত ৫ জুন হাই কোর্ট অবৈধ বলে ঘোষণা করে। সরকার এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল। এএফপি সংবাদ সংস্থার মতে, রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করেছে, যা হাসিনা সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যদিও ২০১৮ সালের সিদ্ধান্তটি আদালত হুবহু বহাল রাখেনি, হাই কোর্টের রায় বাতিল করা হলেও সংরক্ষণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করা হয়নি। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মোট সাত শতাংশ সংরক্ষণ বজায় রাখা হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য এবং বাকি দুই শতাংশ অন্য শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত। মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে। আদালত আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে বলেছে।
BREAKING: Bangladesh's top court scales back job quotas that sparked deadly unrest: attorney-general pic.twitter.com/ssSN3Vort8
— AFP News Agency (@AFP) July 21, 2024
বাংলাদেশে সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঢাকার রাজপথে পুলিশ এবং আন্দোলনকারী ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ১৫১। সরকার শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করেছে, যা বর্তমানেও বলবৎ আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শুনানির পর, বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীন এএফপিকে জানান, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে হাই কোর্টের রায় অবৈধ ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য সরকারি চাকরিতে পাঁচ শতাংশ এবং অন্যান্য শ্রেণির জন্য দুই শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে।
বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষিত হয়ে থাকে এবং বাকি ৪৪ শতাংশ সাধারণ জনগণের জন্য নির্ধারিত। ১৯৭২ সাল থেকে এই নিয়ম কার্যকর। সংরক্ষিত ৫৬ শতাংশ আসনের মধ্যে, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য আরও ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ, এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ পদ সংরক্ষিত ছিল।
২০১৮ সালে, সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০%, নারীদের জন্য ১০% এবং জেলা খাতে ১০% সংরক্ষণ বাতিল করেন। শুধু জনজাতিদের ৫% এবং প্রতিবন্ধীদের ১% সংরক্ষণ বহাল রাখা হয়। ২০২১ সালে, সাত জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন এই নির্দেশনামার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান। গত ৫ জুন, হাই কোর্ট হাসিনা সরকারের নির্দেশকে অবৈধ ঘোষণা করে। এর ফলে পুনরায় পূর্বের মতো সংরক্ষণ ফিরে আসে। এর প্রতিবাদে ছাত্ররা আবার আন্দোলনে নামে। সম্প্রতি আন্দোলনের কারণে বাংলাদেশ রণক্ষেত্রের চেহারা ধারণ করে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর দেশে অশান্তি কমার আশা করা হচ্ছে।