বিতর্কের ভয়ে জাতীয় সঙ্গীত বদলের ভাবনা থেকে সরে আসলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার!
‘আমার সোনার বাংলা’র পরিবর্তন সম্পর্কে কোনো চিন্তা নেই। বিতর্ক এড়াতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। রাজশাহীর ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিদর্শন ও সুধী সমাবেশ শেষে, ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন জানান, “জাতীয় সঙ্গীতে কোনো পরিবর্তন নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে না, এবং অন্তর্বর্তী সরকার বিতর্ক সৃষ্টি করবে না।”
গত বুধবার জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আজমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিকে বাদ দিয়ে অন্য একটি গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে প্রস্তাব করেন। তাঁর মূল যুক্তি হল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতীয় এবং গানটি ইসলামিক ভাবধারায় রচিত নয়। এই প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নীরবতা তাৎপর্যপূর্ণ মনে হচ্ছিল। তবে শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন।
এই বছর দুর্গাপুজোর মণ্ডপ পাহারায় মাদ্রাসার ছাত্ররা থাকবে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মহম্মদ ইউনুস। বাংলাদেশে অক্টোবর মাসে হিন্দুদের বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজো পালিত হয়। প্রতি বছর প্রায় ২৯ হাজার দুর্গাপুজো হয়, যার জন্য সরকার অনুদান প্রদান করে। ঢাকা শহরে প্রায় পাঁচশো দুর্গাপুজোর মণ্ডপ নির্মিত হয়। এবার এসব মণ্ডপের নিরাপত্তায় মাদ্রাসার ছাত্ররা দায়িত্বে থাকবে। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা খালিদ হোসেন জানিয়েছেন, মাদ্রাসা ছাত্রদের সম্পৃক্ত করে মন্দির পাহারা দেওয়া হবে।
খালিদ হোসেন বলেন, “যে সকল ব্যক্তি ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালান, তারা মানবতার শত্রু এবং অপরাধী। তাদের প্রচলিত আইনে বিচার করা হবে। মাদ্রাসা ছাত্ররা কোনও জঙ্গিমূলক কার্যকলাপে জড়িত ছিল না; এটি পূর্বের সরকারের ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার।” তিনি আরও যোগ করেন, “পট পরিবর্তনের পরে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে যেমন হামলা হয়েছে, তেমনি মুসলমানদের বাড়িতেও হামলা হয়েছে। এই ঘটনাগুলোকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনও সুযোগ নেই।”