বাংলাদেশ কি ভারতের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছে ?এ কি বড় পদক্ষেপ ইউনূস সরকারের!
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে এক নতুন মোড় এসেছে। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতে অবস্থানরত হাই কমিশনার সহ পাঁচ রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, এই পাঁচ রাষ্ট্রদূতকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার এই সপ্তাহেই নোটিস পাঠিয়েছে। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাই কমিশনার এবং পাঁচ রাষ্ট্রদূতকে দ্রুত সমস্ত ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার মুস্তাফিজ়ুর রহমান শীঘ্রই অবসর গ্রহণ করবেন। তাঁর অবসরের পূর্বেই তাঁকে দায়িত্ব ছেড়ে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। এর আগে তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে বাংলাদেশের প্রতিনিধি এবং সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এক অপ্রকাশিত সূত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত খবরে বলা হচ্ছে, শুধুমাত্র ভারত নয়, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, ব্রাসেলস, ক্যানবেরা, এবং লিসবনের রাষ্ট্রদূতদেরকেও বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও, রাষ্ট্রপুঞ্জে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিকেও অবিলম্বে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে, ব্রিটেনের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিমকেও ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকে। সূত্র অনুযায়ী, তারা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর, ইউনূস সরকার হাসিনা সরকার দ্বারা নিয়োগ করা সকল কর্তাব্যক্তিদের পদ থেকে অপসারণ করেছে। তবে, রাষ্ট্রদূতরা রাজনৈতিক নিয়োগ পান না, এমন পরিস্থিতিতে তাদের কেন এভাবে দায়িত্ব ছেড়ে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, এ নিয়ে আমলারা প্রশ্ন তুলেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থানে পতিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এর পরপরই বাংলাদেশে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। নতুন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, ইউনূস সরকার ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করছে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিয়ে। সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের সভায় ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিলেও, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে কোনো মুখোমুখি বৈঠক হয়নি। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন কূটনীতিবিদরা।