সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ, বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলিগের সংঘর্ষে মৃত ৬।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। শিক্ষার্থী ও শাসকদলের ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪০০ জন আহত হয়েছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে ২৯৭ জনের চিকিৎসা চলছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর তিনটে নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওমীলীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর সেই ঝামেলা গোটা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক ছাত্রীও রয়েছেন। আহতদের প্রায় সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। এদিন গভীর রাতে ঢাকার অদূরে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের সদস্যরা দুই দফায় হামলা চালায়। অস্ত্রধারী বহিরাগতদের নিয়ে আসে তারা এবং পুলিশকেও আক্রমণ করে।
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের সংরক্ষণ নীতি পরিবর্তনের দাবিতে চলমান বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে, কিন্তু ইটবৃষ্টি ও লাঠি নিয়ে মারামারি চলতে থাকে। অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ও আদালতের অনুরোধ সত্ত্বেও, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরেনি। পুরনো সংরক্ষণ নীতির পরিবর্তে মেধা-ভিত্তিক সংরক্ষণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করছিলেন। শাসক দল আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে এই বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে।
ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন ও সংবিধানের অধীনে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করতে হবে এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে. আমেরিকাও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং জানিয়েছে যে তারা বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনের সকল বিষয় কড়াভাবে পর্যবেক্ষণ করছে. আমেরিকার বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে মেধাভিত্তিক পদ্ধতির পক্ষে কোটা সংস্কারের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ যে কোনও গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য ।