বাংলাদেশের হিংসাত্মক ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর কড়া নজরদারি, নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৯৯৮ ভারতীয় ছাত্রছাত্রীকে।
বাংলাদেশ কোটা বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল। সে দেশে হিংসার আগুন জ্বলছে। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে এগোচ্ছে। ভারতের পাশের দেশে অব্যাহত প্রতিবাদ-আন্দোলনের ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হচ্ছে। আন্দোলনরত ছাত্রদের থামাতে শেখ হাসিনা সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য শেখ হাসিনা সরকার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেছে। চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সিস্টেমের বিরোধিতায় চলমান বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রায় ১০৫ জন নিহত হয়েছেন।
এ বার আরও কড়া পথে হাঁটল প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার সরকার। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, সারা বাংলাদেশে ‘শুট অন সাইট’ জারি করেছে সরকার। অর্থাৎ দেখামাত্রই গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হল সেনাবাহিনীকে। কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে যে আন্দোলন চলছে, তাতে শনিবার পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ১১৪ জন বলে জানিয়েছে রয়টার্স-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। বিবিসি নিউজ বাংলা দাবি করেছে, শনিবার সে দেশে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মী।
কোটা বিরোধী বিক্ষোভের ফলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমনই খারাপ যে, বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা দলে দলে দেশ ছেড়ে যেতে শুরু করেছেন। তারা যেভাবে সম্ভব বাংলাদেশ ত্যাগের চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “সরকার আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসার জন্য আগ্রহী।” সংবাদ সংস্থা এপি অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীরাও আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
তবে, বিক্ষোভের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম রয়টার্সকে জানান, “আলোচনা এবং গুলি চালানো একই সাথে চলতে পারে না… আমরা আলোচনার জন্য মৃতদেহের উপর পা দিতে পারি না।” এদিকে, বিক্ষোভের ফলে বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট অস্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে এবং ট্রেন পরিষেবাও স্থগিত রয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রক শুক্রবারে বাংলাদেশের ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন কর্তৃক জারি করা পরামর্শ মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে। কোটা বিক্ষোভের সময় বাংলাদেশে ভ্রমণ এবং বাড়ির বাইরে চলাচল সীমিত করার জন্য ভারতীয় হাই কমিশন অনুরোধ জানিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা বলেছেন যে হাই কমিশন এবং সহযোগী হাই কমিশনগুলি যেকোনো সহায়তার জন্য হেল্পলাইন নম্বরে প্রস্তুত থাকবে।
বাংলাদেশে কোটা বিরোধী বিক্ষোভ দিন দিন আরও হিংসাত্মক হয়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিস শুক্রবার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেছে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সামরিক বাহিনী মোতায়েনের ঘোষণা করেছে, এএফপি সংবাদ সংস্থা এমন খবর দিয়েছে। প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুসারে, মৃত্যুর সংখ্যা ১০৫ জনে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশে টেলিভিশনের নিউজ চ্যানেলগুলো বন্ধ করা হয়েছে । টেলিযোগাযোগ সেবা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক সংবাদপত্রের ওয়েবসাইট এবং সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে। বিদেশে টেলিফোন এবং ইন্টারনেট কল করা সম্ভব হচ্ছে না।
আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশের কোটা প্রথার অবসান চেয়েছে, যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের পরিবারের জন্য সরকারি চাকরিতে ৩০% সংরক্ষণ বরাদ্দ করে। ছাত্র সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেছে যে কোটা প্রথা বৈষম্য সৃষ্টি করছে এবং প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সমর্থকদের অতিরিক্ত সুবিধা দিচ্ছে।