দেশজুড়ে বিক্ষোভের চাপে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেছেন। গণবিদ্রোহের দাবি মেনে নেওয়ার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও তাঁকে ইস্তফার অনুরোধ করা হয়েছিল। সূত্রের খবর অনুযায়ী, নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের আহ্বান জানান। এরপর ওলি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়ে শেষমেশ পদত্যাগ করেন।
ওলির পাশাপাশি তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরাও বিক্ষোভের শিকার হচ্ছেন। উত্তেজিত জনতা মন্ত্রীদের অনেকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এমনকি ওলির ব্যক্তিগত বাসভবনেও আগুন ধরানো হয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, ওলি দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করছেন, এবং তাঁর গন্তব্য হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই। তবে এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
- আরও পড়ুন এখানে – ভারত থেকে তেল কিনতে সমস্যা থাকলে কিনবেন না, আমরা জোর করছি না, আমেরিকাকে পাল্টা বার্তা জয়শঙ্করের!
বিক্ষোভের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ওলি। মঙ্গলবার সকালে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, সন্ধ্যায় সর্বদলীয় বৈঠক করবেন। কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় এবং উদ্ভূত সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়, তা নিয়ে বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে পরিস্থিতির চাপে সন্ধ্যার আগেই তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।
সম্প্রতি নেপাল সরকার সমাজমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, যা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিনের জমীভুত ক্ষোভের আগুনে ঘৃতাহুতি দেয় ওলির এই সিদ্ধান্ত। এর প্রতিবাদে ছাত্রযুবরা তথা জেন জি রা পথে নামে, এবং সোমবার রাজধানী কাঠমান্ডু অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ গুলি চালালে অন্তত ১৯ জন বিক্ষোভকারী মারা যান। এরপর বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। চাপের মুখে নেপাল সরকার রাতেই সমাজমাধ্যমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ও বিবৃতি জারি করে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওলির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল, ফলে শেষমেশ চাপের মুখে ওলিকে নতিস্বীকার করতে হয়।
- আরও পড়ুন এখানে –শুল্ক চাপিয়ে উল্টো হাঁসফাঁস দশা ‘অহঙ্কারী’ ট্রাম্পের,মুক্তি পেতে ফের মোদীর শরণে,কিন্তু ফোনই তুলছেন না প্রধানমন্ত্রী?
দেশ ছাড়ার জন্য নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারেন ওলি। তবে ইতিমধ্যেই বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং সমস্ত উড়ান বাতিল করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার ওলি ও নেপালের অন্যান্য মন্ত্রীদের নিরাপদে সরানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ৩০০-র বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।