জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রম্মচারী জামিন পেয়েছেন ৬ মাস পর।
চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ বুধবার বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান এবং বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্ব গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন।
মামলায় জামিন চেয়ে চিন্ময় দাস কর্তৃক দাখিল আবেদনের শেষে হাইকোর্ট গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল জারি করেন। রুল আবেদনকারী চিন্ময় দাসকে কেন জামিন হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
গত ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট শুনানির জন্য রুলের তারিখ ৩০ এপ্রিল নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুলটি ‘অ্যাবসলিউট’ ঘোষণা করে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
আদালতে চিন্ময় দাসের পক্ষে আইনীবী জেড আই খান পান্না, প্রবীর হালদার ও অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক শুনানিতে অংশ নেন। এছাড়া অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুইঞা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইনজীবী প্রবীর হালদার জানান , হাইকোর্ট চিন্ময় দাসকে জামিন দিয়েছেন। জামিন হওয়ায় তাঁর মুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
এই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত ২ জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। এ বিষয়ে হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীীন জামিন চেয়ে গত ১২ জানুয়ারি আবেদন করেন চিন্ময় দাস। উক্ত আবেদনের শুনানি শেষে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ আদালত সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে গত বছরের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জামিন নামঞ্জুরের পর চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরদিন জামিন শুনানির তারিখ ধার্য থাকলেও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতির কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে আদালত ৩ ডিসেম্বর শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। সেদিন চিন্ময়ের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আদালত শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। সেদিনও তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রম্মচারী সহ কয়েকজন গ্রেপ্তার করা হয়।