মঙ্গলবার দুপুরে জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এই ঘটনায় পাকিস্তানের আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে। পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের মদতের বিষয়টি স্পষ্ট। পহেলগাঁওয়ে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার জঙ্গিকে শনাক্ত করেছে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। গোয়েন্দাে জানা গিয়েছে, চার জঙ্গি হলেন— আদিল, আসিফ ফুজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা। বেছে বেছে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছে সেখানে। জঙ্গিরা গুলি চালানোর আগে পর্যটকদের ধর্মীয় পরিচয় জানতে চেয়েছে। হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করেই তাদের হত্যা করা হয়। হিন্দুদের প্রতি এত রাগ ও বিদ্বেষ থাকা সত্ত্বেও, এই পাকিস্তানিরা যাঁরা মহম্মদ আলি জিন্নাহকে ‘দেশের জনক’ বলে আখ্যা দেয়, তাঁদের জানা উচিত যে জিন্নাহর পরিবারই হিন্দু ছিলেন।
পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল ছিলেন মহমদ আলি জিন্নাহ, যিনি দেশভাগের মূল স্থপতি হিসেবেও পরিচিত। জিন্নাহ ১৮৭৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে আশ্চর্যের বিষয়, তাঁর পরিবার একসময় হিন্দু ছিল। তাঁরা লোহানা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যা হিন্দু ধর্মের একটি উপসম্প্রদায়।
জিন্নাহর বাবা ছিলেন জিন্নাহভাই পুঞ্জা, যিনি গুজরাটের অধিবাসী ছিলেন এবং পরবর্তীতে করাচিতে বসবাস শুরু করেন। জিন্নাহর ঠাকুর্দা পুঞ্জা গোকুলদাস মেঘজি রাজকোটের পানেলি মোটি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। জানা যায়, পুঞ্জা ভাই মাছ বিক্রি করতেন, যা লোহানা সম্প্রদায়ের মধ্যে আপত্তির কারণ ছিল। পুঞ্জা ভাইয়ের ব্যবসা বন্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভও প্রদর্শিত হয়।

প্রবল বিক্ষোভের পরে সামাজিক বয়কটের সম্মুখীন হতে হয়েছিল জিন্নাহর পূর্বপুরুষদের। এর পরেই তারা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তবে ইতিহাসের বহু গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে যে মুসলিম হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের আক্ষেপ ছিল। তারা পুনরায় হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই অনুমতি পাননি।
এরপর ব্যবসার উদ্দেশ্যে মহম্মদ আলি জিন্নাহর পিতা জিন্নাহভাই পুঞ্জা করাচিতে যান এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি নামের আগে যুক্ত করেন “মহম্মদ”।
আবার অন্য একটি সূত্রের মতে, জিন্নাহর পূর্বপুরুষ রাজপুত ছিলেন। এক পাকিস্তানি লেখকের ‘মিস্টার জিন্নাহ’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জিন্নাহর পূর্বপুরুষরা পাঞ্জাবের সাহিওয়ালের রাজপুত ছিলেন। তারা ইসমাইলি খোজাকে বিয়ে করে কাঠিয়াওয়ারে বসবাস করতেন। ইসমাইলি আগা খানের অনুসারী ছিলেন এবং পরে তারা সুন্নি মুসলিম হন। মহম্মদ আলি জিন্নাহ নিজেও এই তথ্যটি স্বীকার করেছিলেন।