ঠিক ১৭ বছর পর চেন্নাই সুপার কিংসকে তাদের ঘরের মাঠে হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আইপিএলের প্রথম বছর ২০০৮ সালে চেন্নাইয়ে জিতেছিল বেঙ্গালুরু। সেটাই ছিল প্রথম বার। এত বছর ধরে সেটাই ছিল শেষ বার। অনিল কুম্বলে, বিরাট কোহলি থেকে ডু’প্লেসি, অধিনায়ক বদলে গেলেও ফল বদলায়নি। বার বার চেন্নাই থেকে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে বেঙ্গালুরুকে। সেই ফল বদলালেন রজত পাটীদার । ১৭ পর আবার দক্ষিণী ডার্বি জিতল বেঙ্গালুরু। ব্যাট, বল, ফিল্ডিং, তিন ক্ষেত্রেই দাপট দেখাল তারা। ৫০ রানে চেন্নাইকে হারিয়ে আইপিএলে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষেই থাকলেন কোহলিরা। আইপিএলে ঘরের মাঠে এই প্রথম এত বড় রানে হারল চেন্নাই।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। চেনা ফর্মুলা অনুযায়ী, প্রথমে বল করে প্রতিপক্ষকে যত কম রানে সম্ভব আটকে রাখা এবং পরে শিশিরের মাঝে সেই রান তাড়া করা। কিন্তু চেন্নাইয়ে শিশির পড়ল না, ফলে চেনা ফর্মুলা কাজে দিল না। উল্টে বেঙ্গালুরুর করা ১৯৬ রানের চাপে ভেঙে পড়ল চেন্নাইয়ের ব্যাটিং।
চেন্নাইয়ের উইকেটে ১৯৭ রান তাড়া কঠিন। সেই কাজটি আরও কঠিন করে তুললেন বেঙ্গালুরুর পেসাররা। জশ হেজলউড, ভুবনেশ্বর কুমার ও যশ দয়ালের সামনে সমস্যায় পড়ল চেন্নাইয়ের ব্যাট টি-টোয়েন্টিতেও অভিজ্ঞ কতটা তা প্রমাণ করলেন হেজলউড, ভুবনেশ্বররা। দ্বিতীয়ভারেই ত্রিপাঠীকে আউট করলেন হেজলউড। পরপর দু’ম্যাচে ব্যর্থ চেন্নাইয়ের নতুন ওপেনার। আগের ম্যাচে অর্ধশত করলেও এই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেন অধিনায়ক রিতুরাজ। এক ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে চেন্নাইকে বড় ধাক্কা দেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার।
মিডল অর্ডারে আরও সমস্যায় পড়ল চেন্নাই। দীপক হুডা এবং স্যাম কারেন স্কোরবোর্ড সচল রাখতে সমস্যায় পড়লেন। ডট বল খেলায় চাপছিল। ভুবনেশ্বরের বলে ৪ রান করে আউট হন হুডা এবং লিভিংস্টোনের বলে ৮ রান করে আউট হন কারেন। ৫২ রানে ৪ উইকেট পড়ে যায় ধোনিদের।
শেষ ছয় ওভারে জিততে প্রয়োজন ছিল ১১০ রান। এই পরিস্থিতি থেকে চেন্নাইকে উদ্ধার করার ক্ষমতা ৪৩ বছরের ধোনির ছিল না । সেই জন্যই হয়তো নম্বরে ধোনির বদলে অশ্বিনকে নামানো হয়েছিল। দেখে বোঝা যাচিল, তারা হার মেনে নিয়েছে। যতটা সম্ভব রান তোলার চেষ্টা করছিলেন জাদেজা , যাতে নেট রান রেট কিছুটা ভালো হয়। বেঙ্গালুরু চেষ্টা করছিল চেন্নাইকে অলআউট করার। বড় শটের বদলে দৌড়ে রান নেওয়ার দিকেই নজর ছিল জাডেজা ও অশ্বিনের। সেই চেষ্টাও বেশি ক্ষণ টেকেনি। লিভিংস্টোনের বলে ১১ রান করে আউট হন অশ্বিন।
২৮ বল বাকি থাকতে মাঠে নামেন ধোনি। হার নিশ্চিত জানার পরেও চিপকে দর্শকদের চিৎকারে কান পাতা যাচ্ছিল না। শেষ দিকে কয়েকটি বড় শটও মারেন তিনি। শেষ ওভারে ধোনির ব্যাট থেকে জোড়া ছাও দেখা যায়। তাতে অবশ্য খেলার ফল বদলায়নি। শেষ পর্যন্ত ১৪৬ানে শেষ হয় চেন্নাইয়ের ইনিংস। ধোনি ১৬ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন।