SLST চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন ঝুলিয়ে দিতে চোর চোর শুনেও,জুতোর বাড়ি খেয়েও আলোচনার প্রস্তাব কুনালের !
SLST চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের ১০০০তম দিনে ধর্নামঞ্চে মাথা মুড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন এক SLST মহিলা চাকরিপ্রার্থী। কান্নায় ভেঙে পড়া অবস্থায় তাঁর আবেদন ছিল, অতিশীগ্রই তাঁর মতো চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করা হোক। তাঁদের কথা শুনুক রাজ্য সরকার।
ওই SLST মহিলা চাকরিপ্রার্থীকে দেখতে এবং এই আন্দোলনের ঝাঝঁকে কমিয়ে দিতে শাসকদলের তরফে কুণাল ঘোষ ধর্নামঞ্চে উপস্থিত হতেই উঠল চোর-চোর স্লোগান। কুনাল এর দিকে উড়ে এলো এক পাটি জুতোও । যদিও তার পরেও কুণাল ঘোষ দেখা করলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আলোচনা থেকেই সমাধানের পথ আসে। আন্দোলন তো পালিয়ে যাচ্ছে না। গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে।’’
SLST চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের ১০০০তম দিনে তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিজেপি এবং বাম নেতৃত্ব তাদের সঙ্গে দেখা করেন। বিকেলে ওই মঞ্চে উপস্থিত হন কুণাল ঘোষ । সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় হুলস্থুল পরিস্থিতি। চাকরিপ্রার্থী, বিরোধী নেতৃত্ব এবং পুলিশের ধস্তাধস্তির মধ্যে পড়ে যান তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ,চলে বিক্ষোভ ।
কিছু পরে তিনি কথা বলেন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। কুণাল ঘোষ বলেন , আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবহিত। এ নিয়ে আলোচনার পথ উন্মুক্ত আছে। আগামী সোমবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের আলোচনা হবে বলেও জানান তিনি।শাসকদলের তরফে কুণালের উপস্থিতি এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলার পর খুশি চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।
অন্য দিকে, এর পর কুণাল জানান যে চাকরিপ্রার্থী তাঁর মাথা কামিয়ে ফেলেছেন, তাঁকে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন। তাঁর সঙ্গে একাধিক বার তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে। ছেলেকে কোলে নিয়ে ওই চাকরিপ্রার্থীর আন্দোলনকে তিনি সম্মান করেন। তাঁর এই মাথা মুড়িয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি দেখা করতে এসেছেন। কুণালের কথায়, কার কথায় মাথা কামালেন, দেখতে এসেছি।
কুনালের সংযোজন, যদি কেউ মনে করেন স্লোগান দিয়ে চাকরি পাবেন, গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন করার অধিকার আছে,করতে পারেন।আর সরকারের তরফে কোনও ভুল থাকলে সরকারের তরফেই তার প্রায়শ্চিত্ত হবে।
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের SLST টির নম্বরভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। সামনের সারির মেধাকে বঞ্চিত করে পিছনের সারির প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে। এবং এসএমএসের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ২৯ দিন অনশন করেছিলেন তাঁরা। তখন তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও তাঁরা চাকরি পাননি— এই অভিযোগে আবার অনশনে বসেন কয়েকশো যুবক-যুবতী।
২০২১ সালে সল্টলেকে ১৮৭ দিন ধর্না দেন তাঁরা। এরপর গত ১০০০ দিবারাত্রি কেটেছে রাস্তায়। কিন্তু চাকরি হয়নি।কারণ এদের জন্য যে পদ ছিলো তৃণমূলের নেতারা সেগুলো টাকার বিনিময়ে বেচে দিয়ে অবৈধ নিয়োগ করেছে।আর এখানে যারা বসে আন্দোলন করে চলেছে তারা যোগ্যপ্রার্থী,কিন্তু টাকা দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেসকে।তাই চাকরি হয়নি। যারা যোগ্য এবং এই যোগ্যদের গত সাত বছরে নিয়োগ হয়নি,তাদের এখন নিয়োগ আদৌ হবে কিনা,সেটা নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে SLST চাকরিপ্রার্থীরা।
আর এই আন্দোলনের ঝাঝঁকে কমিয়ে দিতে শাসকদলের তরফে কুণাল ঘোষ চোর গাল শুনেও,জুতোর বাড়ি খেয়েও আন্দোলনকারীদের সাথে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দিয়ে গেলো।