মিলে গেলো বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ বাণী ! মামলা সরাতে সুপ্রীমকোর্টে অভিষেক !
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা। এই রকমই অবস্থা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তথাকথিত সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি অমৃতা সিনহার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিছুদিন আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরিয়ে নেয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন অভিষেক ব্যানার্জী। তার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রীমকোর্ট কিছু মামলা বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে বদলি করে দেয়েছিলো।এবার সেই আদালতের রায় নিজের পক্ষে না যাওয়ায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাস থেকে সকল মামলা সরিয়ে দেয়ার আবেদন করেছে অভিষেক ব্যানার্জী। এ যেনো মামা বাড়ির আবদার।
সম্প্রতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে একটি চিঠিও জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। এর পরেই গত সোমবার হাই কোর্ট থেকে বেরোনোর সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভিষেকের সম্পত্তির হিসাব বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
সেই আবহে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন অভিষেক ব্যানার্জী । শীর্ষ আদালতে তৃণমূল সাংসদ মূলত যে পাঁচটি আর্জি জানিয়েছেন তা দেখে নেওয়া যাক এক নজরে-
১। বিচারপতি আদালতের ভিতরে বা বাইরে বাদী-বিবাদী পক্ষকে নিয়ে নানা মন্তব্য করে থাকেন।অভিষেকের দাবি ,সেই সব মন্তব্য যাতে কোনও ভাবেই তদন্তকে প্রভাবিত না করে, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হোক।
২। বিচারব্যবস্থার নীতি-আদর্শের প্রশ্ন তুলে অভিষেকের অভিযোগ, রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হয়ে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন বিচারপতি। সাংসদের আর্জি, ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হোক।
৩। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে একটি বিশেষ বেঞ্চ তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হোক। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে যে সব মামলা রয়েছে এবং তাঁর বেঞ্চ থেকে যে মামলাগুলি সরে বিচারপতি অমৃতা সিনহার গিয়েছে, সেই সব মামলার শুনানি ওই বিশেষ বেঞ্চেই হোক।
৪। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যাতে কোনও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করেন, তা নিশ্চিত করতে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হোক।
৫। সমস্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালত যা উচিত মনে করবে, তেমনই নির্দেশ দিক।
বস্তুত, দু’দিন আগেই অভিষেকের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি অভিজিৎগঙ্গোপাধ্যায়। হাইকোর্ট থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, ওদের অসুবিধা হচ্ছে আমার বিভিন্ন পদক্ষেপে কারণ ওদের বিভিন্ন চোরেরা জেলে রয়েছেন,আরো কিছু চোর জেলে যাবে । সেই জন্যই আমার উপর এত রাগ।
এর পরেই বিচারপতির সংযোজন, যে ভাবে মামলা করে দুর্নীতির তদন্ত আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে ,তাতে মাঝে মাঝে মনে হয়, কোন দিন দেখব, একদল চোরও বিরাট বিরাট আইনজীবী দাঁড় করিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবে যে আমরা চৌর্যবৃত্তি করে বাঁচি,আমাদের বিষয় সম্পত্তি সবই চুরি করে করা।আর যদি এটা বন্ধ হয়ে যায় আমাদের জীবন এবং জীবিকার অসুবিধা হবে। সুতরাং সেটা অনুচ্ছেদ ২১ সংবিধানের ধারাকে লঙ্ঘন করবে। আমাদের অবাধে চুরি করার অধিকার দেওয়া হোক।
এবার অভিষেক ব্যানার্জীর উপরোক্ত আবেদন নিয়ে সুপ্রীমকোর্টে যাওয়াতে মিলে গেলো বিচারপতি অভিজিৎগঙ্গোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ বাণী।