১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনাকে মলদ্বীপ ছাড়ার নির্দেশ মুইজ্জুর ! চিনের মদতেই এই বাড়বাড়ন্ত মলদ্বীপের !
চিন সফরের পরেই এবার ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মলদ্বীপের চিনপন্থী প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। শনিবার হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছিলেন,আমরা ক্ষুদ্র হতে পারি কিন্তু কাউকে ধমকানোর ছাড়পত্র দেয়নি তার সরকার।আজ রবিবারই ভারতীয় সেনাকে দ্রুত মলদ্বীপ ছাড়তে বলল মলদ্বীপের সরকার। তবে এ বার শুধু কূটনৈতিক স্তরে আর্জি জানানোই নয়, সরাসরি ২ মাসের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে মলদ্বীপ সরকার। অর্থাৎ আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনাকে মলদ্বীপ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই(PTI)-এর তরফে এই খবর পাওয়া গিয়েছে।
এর আগে কূটনৈতিক স্তরে সেনা সরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতকে আর্জি জানিয়েছিল ভারত। এ বার সরাসরি আদেশ দেওয়া হল। মুইজ্জুর সচিবালয়ের শীর্ষ আমলা আবদুল্লা নাজ়িম ইব্রাহিম সে দেশের একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এবং তাঁর সরকারের সিদ্ধান্ত ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না।অথচ এই ভারতীয় সেনারাই হেলিকপ্টার ও জাহাজে করে মলদ্বীপের ছোট ছোট দ্বীপে খাদ্য,জ্বালানি,ওষুধ,নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিত।
মুইজ্জুর সেনা সরানো সংক্রান্ত নির্দেশের নেপথ্যে চিনের হাত দেখছেন কেউ কেউ। কারণ ভারত-মলদ্বীপ চলতি বিতর্কের শুরুতে খানিক সুর নরমের ইঙ্গিত দিয়েছিল মলদ্বীপ সরকার।
কিন্তু গত সপ্তাহেই তিনি পাঁচ দিনের জন্য চিন সফরে যান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। সফরের তৃতীয় দিনে গত বুধবার প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু চিনের প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের সঙ্গে রাজধানী বেজিংয়ে বৈঠক করেন । সেখানেই ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের আবহে মলদ্বীপের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন চিনা প্রেসিডেন্ট তথা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষনেতা জিনপিং।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই বৈঠকেই প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু বেজিংকে তাঁদের ‘পুরনো বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠতম সহযোগী’ বলেন। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ২০টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
ভারত-মলদ্বীপ প্রসঙ্গে এবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar) । শনিবার নাগপুরে এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিদেশমন্ত্রী পরিষ্কার বলেন ,রাজনীতি আসলে রাজনীতিই। কখনওই গ্যারান্টি দেয়া যাবে না যে, সব দেশে প্রতিদিন প্রত্যেক মানুষ ভারতকে সমর্থন করবেন, পাশে থাকবেন। তবে জয়শঙ্কর মনে করেন, চেষ্টা করেছে ভারত।
তবে এখানেই শেষ নয়, এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar) আরও জানিয়েছেন,গত ১০ বছর ধরে পৃথিবীর বাকি দেশের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেছি, এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। এর ফলে কখনও কোনো দেশে রাজনৈতিক চাপানউতর হলেও, সেই দেশের মানুষের যাতে ভারতের প্রতি অনুভূতি অটুট থাকে সে চেষ্টাই করে চলেছি আমরা।
পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar) আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি চিনের সঙ্গে ২০টি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মালদ্বীপ সরকার। উল্টে পরিকাঠামো উন্নয়নে মালদ্বীপকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজিং। বদলে চিনের থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে চিনের কাছে ক্রমেই হাত-পা বাঁধা পড়তে চলেছে মলদ্বীপের।
এদিকে রবিবারই চিনের পরোক্ষ উস্কানিতে মুইজ্জুর নির্দেশে দ্রুত সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল দুই দেশ, এমনটাই জানা গিয়েছে। রবিবারই দুই দেশের আধিকারিকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে । জানা গিয়েছে, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যেই মালদ্বীপ ছাড়তে হবে ভারতীয় সেনাকে। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানো ছাড়াও আরও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেই খবর।