সন্দেশখালিতে কেনো সিবিআই হানা?আইনশৃংখলা রাজ্যের ব্যাপার বলে তৃণমূলের চিঠি নির্বাচন কমিশনকে!
সন্দেশখালিতে শুক্রবার সারাদিন চলা তল্লাশিতে সিবিআই অস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলির মধ্যে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং পুলিশের ব্যবহৃত রিভলভার রয়েছে। এছাড়াও কার্তুজ এবং দেশি বোমা উদ্ধার হয়েছে। সিবিআই প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছবি সহ দাবি করা হয়েছে যে, অস্ত্রের সাথে সাথে কিছু নথিও উদ্ধার হয়েছে, যার মধ্যে জেলবন্দি তৃণমূল নেতা শাহজাহানের সচিত্র পরিচয়পত্র অন্তর্ভুক্ত। সারাদিনের তল্লাশির পর, রাত ৯টা ৫৪ মিনিটে সিবিআই এবং এনএসজি সন্দেশখালি ত্যাগ করেছে।
কলকাতা হাই কোর্টের আদেশে, সন্দেশখালি মামলার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআই গ্রহণ করেছে। গত ৫ জানুয়ারি, এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে অনুসন্ধান চালানোর সময়, ইডি কর্মকর্তারা নেতার অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, ইডি কর্মকর্তাদের প্রাণ বাঁচাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের পালাতে হয় এবং তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও হারিয়ে যায়।
সিবিআই দাবি করেছে যে, শাহজাহানের ছবি এবং পরিচয় সম্বলিত পরিচয়পত্র সহ অন্যান্য নথিও উদ্ধার করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে ইডির হারানো জিনিসপত্র এবং সন্দেহজনক নথি শাহজাহানের অনুগামীদের বাড়িতে লুকানো থাকতে পারে বলে খবর ছিল। এর ভিত্তিতে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে সিবিআই শাহজাহানের দুই অনুগামীর বাড়ি থেকে অস্ত্র এবং নথি উদ্ধার করে।
সন্ধ্যায় সিবিআই প্রকাশ করেছে যে, তল্লাশিতে তিনটি বিদেশি রিভলভার, একটি ভারতীয় রিভলভার, এবং কোল্ট কোম্পানির তৈরি পুলিশের ব্যবহারের জন্য একটি রিভলভার উদ্ধার হয়েছে।এছাড়াও বিদেশে তৈরি একটি পিস্তল, একটি দেশি বন্দুক,নয় মিলিমিটারের একশো কুড়িটি বুলেট, পয়েন্ট পঁয়তাল্লিশ ক্যালিবারের পঞ্চাশটি টি কার্তুজ, নয় মিলিমিটার ক্যালিবারের একশো কুড়িটি কার্তুজ, পয়েন্ট তিনশোআশি কার্তুজ পঞ্চাশটি , পয়েন্ট বত্রিশ কার্তুজ আটটি।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে দ্বিতীয় দফা ভোটের দিনে সিবিআই অভিযান চালানোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছে তৃণমূল। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটের সময় সিবিআই অভিযানের ফলে তৃণমূল এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। এর জন্য তৃণমূল কমিশনের কাছে জরুরি নির্দেশিকা চেয়েছে।
তৃণমূল বলেছে যে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ রাজ্যের দায়িত্ব। তবে, সিবিআই রাজ্য সরকার বা পুলিশকে না জানিয়েই অভিযান চালিয়েছে। পুলিশকে অগ্রিম জানানো হলে, তাদের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল অভিযানে সাহায্য করতে পারত। কিন্তু এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পুলিশের কোনো সহায়তা চাওয়া হয়নি। অভিযানের সময় সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি তৃণমূলকে অবাক করেছে। শাসক দলের দাবি, সিবিআই অভিযানের খবর পূর্বেই সংবাদমাধ্যমে ছিল। তাদের জানানো হয়েছিল, কিন্তু রাজ্যকে অভিযানের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
চিঠির শেষাংশে, রাজ্যের শাসক দল উল্লেখ করেছে যে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনের সময় নিয়মিত তৃণমূলকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করছেন। বিশেষ করে সিবিআই দ্বারা পরিচালিত সন্দেশখালির অভিযানটি এর প্রমাণ। কমিশন সিবিআই ব্যবহার করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এই কারণে, তৃণমূল নির্বাচন কমিশনকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।