ট্রাক থেকে তোলা টাকা যাচ্ছে কাঁথিতে,প্রশাসনিক বৈঠকে শুভেন্দুকে তোলাবাজ প্রমাণের চেষ্টা মমতা ব্যানার্জীর !
লোকসভা নির্বাচন শেষ হতেই মঙ্গলবার নবান্নের সভাকক্ষে রাজ্যের সব দপ্তরের মন্ত্রী, সচিব, যুগ্মসচিব, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানে বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও কিছু দপ্তরের কাজে মুখ্যমন্ত্রী সন্তুষ্ট নন, তা তিনি এদিন প্রকাশ করেননি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম উল্লেখ না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। মঙ্গলবার নবান্নের সভাঘরে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি রাজ্য পুলিশের কাজের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। নবান্ন থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের বলেছেন, “ওভারলোডেড ট্রাক থেকে পুলিশ যে টাকা আদায় করছে, তা সরাসরি কাঁথি যাচ্ছে। এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের কাছে প্রমাণ আছে। প্রয়োজনে সরকার এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে।”
বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দুর জেলা কাঁথি ও তমলুক আসনে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। এ নিয়ে কালীঘাটের সাংবাদিক বৈঠকে নাম না করে মমতা বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করেছেন। মঙ্গলবারের প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি রাজ্য পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়কের বিরুদ্ধে ফের আঙুল তুলেছেন।
ট্রাক ওভারলোডিং ছাড়াও, সন্দেশখালি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েছে রাজ্য পুলিশের একাংশ। বসিরহাটের সন্দেশখালি লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছে। নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিরোধীরা সেখানে সক্রিয় হয়েছিল, এবং পাল্টা স্টিং অপারেশনের ভিডিও দিয়ে রাজ্যের শাসকদল পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিল। নবান্ন থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন যে সন্দেশখালিতে এত ঘটনা ঘটে গেল, সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হল, কিন্তু তার কোনও পূর্বাভাস গোয়েন্দা রিপোর্টে সরকারের কাছে আসেনি। পুলিশ প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা মুখ্যমন্ত্রী ভালোভাবে নেননি, যা বৈঠকে পরিষ্কার হয়েছে। এই বৈঠক সম্পর্কে রাজ্য সরকার, পুলিশ বা মুখ্যমন্ত্রীর তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলার কারণে প্রকল্পের বকেয়া অর্থের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। মমতা ব্যানার্জির অভিযোগ অনুযায়ী, কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে আবাসন প্রকল্পের অর্থ প্রদান করছে না, যার ফলে রাজ্যের দরিদ্র জনগণ এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এই পরিস্থিতিতে, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং আসন্ন ডিসেম্বর মাস থেকে প্রকল্পটি শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এই বৈঠকে মমতা আবাস প্রকল্পের জন্য নতুন করে সমীক্ষা করার কথা বলেছেন। প্রশাসনিক বৈঠকে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নবান্ন থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে ওই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে কোনও গাফিলতি হওয়া চলবে না।