১৪৪ ভাঙা TMC নেতার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অন্যদের ধর্ণাও আটকাচ্ছেন কেনো ! প্রশ্ন বিচারপতি অমৃতা সিনহার!
গত বছর অক্টোবরে রাজভবনের সামনে তৃণমূলের কর্মসূচির বিষয়ে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি, এমনটা কলকাতা হাই কোর্টকে জানিয়েছে রাজ্য। মঙ্গলবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, ওই কর্মসূচির প্রেক্ষিতে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন করেন, “কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি? আপনারা যদি নিজেরাই আইন মানেন না, তাহলে অন্যরা কেন মানবে? তাদের কী বলবেন?”
হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, শুভেন্দু অধিকারীকে তার কর্মসূচির সময়কাল আদালতকে জানাতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার। প্রসঙ্গত, গত বছর ৫ থেকে ১০ অক্টোবর, তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন। আদালতে সেই কর্মসূচির প্রসঙ্গ উঠেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এই মাসে, লোকসভা নির্বাচনের পরের হিংসার ঘটনাবলী নিয়ে রাজভবনের সামনে একটি কর্মসূচি আয়োজন করতে চেয়েছিলেন বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায়, তিনি হাই কোর্টে আবেদন করেন। বিচারপতি সিংহ তাকে রাজভবনের বদলে অন্য কোনো জায়গা বেছে নিতে বলেন। শুভেন্দুর আইনজীবী বৃহস্পতিবার জানান, তারা রাজ্য পুলিশের ডিজির অফিসের সামনে ধর্না দেওয়ার অনুমতি চান। ভবানীভবন এবং নবান্ন, এই দুই জায়গায় ডিজির অফিস অবস্থিত, এবং শুভেন্দু এই দুই জায়গার যেকোনো একটিতে অনুমতি চান।
রাজ্যের আইনজীবীরা আপত্তি জানিয়েছেন। শুভেন্দুর আইনজীবী, বিল্বদল ভট্টাচার্য, আদালতকে অবহিত করেন যে, রাজভবনের কাছে যে স্থানে শুভেন্দু ধর্না দেওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন, গত অক্টোবরে সেখানেই তৃণমূলের একাংশ ধর্না দিয়েছিলেন। এরপর তৃণমূলের অক্টোবরের কর্মসূচি উল্লেখ করে বিচারপতি সিংহ মন্তব্য করেন, “রাজভবনের সামনে কেউ যদি পুলিশ নিয়ে ধর্না দেন, তাহলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয় না। কিন্তু ওই একই জায়গায় অন্য কেউ কর্মসূচি করতে গেলে তাদের মারধর করে সরিয়ে দেওয়া হয়। এটা কি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ নয়?”
বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন তুলেছেন, “রাজভবনের সামনে যদি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ধর্না দেওয়া হয়, তাহলে রাজ্য কেন কোনো পদক্ষেপ নেবে না?” তিনি আরও বলেন যে এই ধরনের ঘটনা পরবর্তীতে অন্যান্যদেরও একই কাজ করার প্রেরণা দেবে। আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখা রাজ্যের দায়িত্ব এবং তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। তিনি মনে করেন যে রাজ্যের নীরবতা হয়তো কাউকে রক্ষা করার চেষ্টা। হাই কোর্ট রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে যে রাজভবনের কতটা এলাকা ১৪৪ ধারা অন্তর্ভুক্ত তা জানাতে হবে এবং উত্তর দিকের গেট থেকে ১০ মিটার দূরে ধর্না করা সম্ভব কিনা তা আদালতকে অবহিত করতে হবে।