১৩ বছরের প্রতীক্ষা শেষে টি ২০ বিশ্বকাপে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলো ভারত!
১৩ বছর পর ভারত আবার বিশ্বকাপ জিতেছে। রোহিত শর্মা ও তাঁর দল অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে পরাজিত করেছে। ভারত প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান তোলে। প্রত্যুত্তরে, প্রোটিয়ারা ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে থেমে যায়। মহেন্দ্র সিং ধোনির একদিনের বিশ্বকাপ জয়ের পর, এবার ২০ ওভারের ক্রিকেটে বিশ্বসেরা হল রোহিতের ভারত। ম্যাচ শেষে, ভারতীয় দলের সদস্যরা আনন্দাশ্রু ফেলেন।
রোহিত (৯), পন্থ (শূন্য) এবং সূর্যকুমার (৩) পাঁচ ওভারের মধ্যে আউট হওয়ায় ভারত চাপে পড়ে যায়। ব্যাটিং ধস ঠেকাতে এই সময় ‘প্ল্যান বি’ নিয়ে আসা হয়। সেমিফাইনালের সেরা ক্রিকেটার অক্ষর পটেলকে পাঁচ নম্বরে নামানো হয়। বিরাট কোহলির সাথে জুটি বেঁধে তিনি দলের বিপর্যয় রোধ করেন। কোহলি শুরুতে আগ্রাসী মেজাজে খেলা শুরু করেন। অনেক দিন বাদে তাঁকে এই মেজাজে খেলতে দেখা গেল। কিন্তু চাপে পড়ে তিনি নিজেকে সংযত করেন। অক্ষর চাপ সামলে আবার আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু অবিবেচনাপ্রসূত রান আউট হয়ে যান। তিনি ৩১ বলে ৪৭ রান করেন, যার মধ্যে ১টি চার এবং ৪টি ছয় ছিল। কোহলি উইকেটের অন্য প্রান্তে স্থির থাকেন। শিবম দুবে ফাইনালে কিছুটা লড়াই করেন এবং কোহলিকে সঙ্গ দেন। কোহলি প্রতিযোগিতার প্রথম অর্ধশতরান করেন, ৫৯ বলে ৭৬ রান করে আউট হন। তাঁর ব্যাট থেকে ৬টি চার এবং ২টি ছক্কা আসে। শিবম ১৬ বলে ২৭ রান করেন, যার মধ্যে ৩টি চার এবং ১টি ছয় ছিল। কোহলি এবং শিবমের ৭২ রানের জুটির পর হার্দিক ৫ রানে অপরাজিত থাকেন এবং জাডেজা ২ রানে আউট হন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান বোলার কেশব মহারাজ ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। তিনি প্রথম ওভারে রোহিত এবং পন্থকে আউট করে ভারতকে চাপে ফেলেন। অনরিখ নোখিয়া ২৬ রানে ২ উইকেট এবং কাগিসো রাবাডা ৩৬ রানে ১ উইকেট নেন। মার্কো জানসেন ৪৯ রান খরচ করে ১ উইকেট লাভ করেন। ১৭৭ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিং শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা দ্রুত দুই উইকেট হারায়। যশপ্রীত বুমরা রেজ়া হেনড্রিকসকে (৪) এবং আরশদীপ সিংহ এডেন মার্করামকে (৪) আউট করেন। এরপর কুইন্টন ডিকক এবং ট্রিস্টান স্টাবস তৃতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে ভারতের বোলারদের চাপে ফেলেন। অক্ষর প্যাটেল স্টাবসকে ২১ বলে ৩১ রানে আউট করেন। স্টাবস ৩টি চার এবং ১টি ছয় মারেন। এরপর ডিকক এবং হেনরিক ক্লাসেন জুটি বাঁধেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার রানের গতি বাড়ান। আরশদীপ সিংহ ডিকককে ৩১ বলে ৩৯ রানে আউট করেন, যার ইনিংসে ৪টি চার এবং ১টি ছয় ছিল। ক্লাসেনের আগ্রাসী ব্যাটিং ভারতকে চাপে রাখে এবং তিনি ২৭ বলে ৫২ রান করেন। শেষ পর্যন্ত হার্দিক পান্ডিয়া তাঁকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফেরান।
ক্লাসেন আউট হতে পাল্টা চাপে পড়ে যায় প্রোটিয়ারা। জানসেনও (২) দলকে ভরসা দিতে পারলেন না। তিনি আউট হলেন বুমরার বলে। পর পর ২ উইকেট হারানোর পর ডেভিড মিলার এবং মহারাজ চাপ সামলাতে পারলেন না। বুমরা, আরশদীপদের বল সামলাতে পারলেন না তাঁরা। ছয় মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে সূর্যকুমারের হাতে ধরা পড়েন মরিয়া মিলার। এই উইকেটই ভারতের জয় এর রকম নিশ্চিত করে দেয়। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৬৯ রানের বেশি করতে পারল না প্রোটিয়ারা। অথচ ১৬ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ জেতার দৌড়ে সুবিধাজনক জায়গায় ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাই।
ভারতের সেরা বোলার হার্দিক পাণ্ড্য মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। জসপ্রিত বুমরাহ ১৮ রানে ২ উইকেট এবং আরশদীপ সিং ২০ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন। অক্ষর প্যাটেল ৪৯ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন। অন্যদিকে, ফাইনালে ৪৫ রান দিয়েও কুলদীপ যাদব উইকেট শূন্য থাকলেন।