হিন্দুদের অপমান, অভ্যাস কংগ্রেসের? রাহুলের কাছে হিন্দুরা হিংসাত্মক ? প্রতিবাদ মোদীর!
সোমবার লোকসভায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে সরাসরি আক্রমণাত্মক ভাষণ দেন। পরদিন মঙ্গলবার, জবাবি ভাষণে মোদী রাহুলের নাম উল্লেখ না করে ‘বালক-বুদ্ধি’ বলে কটাক্ষ করেন। লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করেন। রাহুল গান্ধীর নাম না করে তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘আজকাল শিশুদের বিনোদনের কাজ চলছে।’ এবং তিনি বলেন, ‘এনডিএর তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা স্বাধীনতার পর দ্বিতীয়বার ঘটেছে এবং তা ৬০ বছর পর। এই সাফল্য অর্জন অনেক পরিশ্রমের পরে আসে।’
মোদী রাহুল গান্ধীর নাম না করে কটাক্ষ করেন, ‘এক শিশু স্কুল থেকে ফিরে জোরে জোরে কাঁদতে থাকে। মা ভয় পেয়ে যান। শিশুটি বলে, মা আজ স্কুলে এই ছেলেটি আমাকে মেরেছে। মা চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং জিজ্ঞেস করেন, কেন? কিন্তু শিশুটি বলে না যে সে অন্য কোনো বাচ্চাকে গালি দিয়েছিল, কারও খাতা ছিঁড়ে দিয়েছিল, কারও টিফিন নিয়ে নিয়েছিল, শিক্ষককে চোর বলেছিল…। আমরা লোকসভায় গতকাল শিশুসুলভ কাজকর্ম দেখেছি। ‘আমাকে ও মেরেছে, এ মেরেছে, আমাকে এখানে মেরেছে, ওখানে মেরেছে,’ এই ধরনের কথা চলতে থাকে। সমবেদনা পাওয়ার জন্য এখন নতুন নাটক শুরু হয়েছে। কিন্তু দেশ জানে, এই হাজার কোটি টাকার কারচুপিতে তিনি জামিনে বাইরে আছেন। তিনি ওবিসি পরিবারের মানুষদের চোর বলার মামলায় সাজা পেয়েছেন। তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। তাঁর উপর বীর সাভারকরের মতো মহান ব্যক্তিকে অপমান করার মামলা আছে। তাঁর উপর অনেক নেতা, আধিকারিক ও সংস্থায় মিথ্যা বলার গুরুতর অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। বালক-বুদ্ধিতে না বলার ঠিকানা নেই, না ব্যবহারের কোনও নিয়ন্ত্রণ। তাই সংসদে তিনি যাকে তাকে জড়িয়ে ধরেন। সংসদে বসে তিনি কাউকে চোখ মারেন। তাঁর সত্যতা এখন গোটা দেশ জেনে গিয়েছে। তাই দেশ তাঁদের বলছে, তোমার দ্বারা হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, ‘লোকসভা নির্বাচনের সাথে সাথে আমাদের দেশের চারটি রাজ্যেও নির্বাচন হয়েছে। এই চারটি রাজ্যে এনডিএ সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা অসাধারণ জয় লাভ করেছি। ওড়িশা থেকে আমাদের প্রচুর আশীর্বাদ মিলেছে। অন্ধ্রপ্রদেশে এনডিএ বিজয়ী হয়েছে। আমরা অরুণাচল প্রদেশে ফের সরকার গঠন করতে যাচ্ছি। সিকিমেও এনডিএ পুনরায় সরকার গঠন করেছে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে আমরা বিপুল বিজয় অর্জন করেছি। নতুন নতুন অঞ্চলে জনগণের ভালোবাসা পেয়েছি। জনসাধারণের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে দেশের মানুষ কংগ্রেসকে জনমত দিয়েছেন এবং তাদের জনমত হলো যে তারা কেবল বিরোধী দলের আসনে বসে থাকবেন। তর্ক শেষ হলে তারা চিৎকার করতে থাকবেন। এটি কংগ্রেসের ইতিহাসে প্রথমবার যে তারা টানা তিনবার ১০০ আসনের গণ্ডি পার করতে পারেনি এবং এটি তাদের তৃতীয় বৃহত্তম পরাজয়। ভালো হতো যদি কংগ্রেস তাদের পরাজয় মেনে নিত, জনগণের আদেশকে হৃদয়ে গ্রহণ করত এবং আত্মসমালোচনা করত। কিন্তু তারা চেয়ারের আসন পেতে ব্যস্ত।
তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘আমি আমার সাধারণ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, একটি ছোট বাচ্চা যখন সাইকেল চালিয়ে পড়ে যায় এবং কাঁদতে থাকে, তখন একজন বৃদ্ধ এসে বলেন, ‘দেখুন পিঁপড়েটি মারা গেছে, পাখিটি উড়ে গেছে’, এতে শিশুর মনোযোগ অন্য দিকে চলে যায়। এভাবে আমরা শিশুর মনোযোগ সরিয়ে তাকে আপ্যায়ন করি। তাই আজকাল শিশুদের বিনোদন দেওয়ার কাজ চলছে। এবং কংগ্রেস ইকোসিস্টেম এখন এই বিনোদনের কাজ করছে। 1984 সালের নির্বাচনের পর এদেশে ১০টি লোকসভা নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু কংগ্রেস আড়াইশোর অঙ্ক ছুঁতে পারেনি। এবার আমরা কোনোভাবে ৯৯-এর ফাঁদে আটকে গেছি।’