‘তুই বাঁচবি না, গুলি করে দেব’, সৌগত রায়ের পর এবার মদন মিত্রকে খুনের হুমকি!
সৌগত রায়ের পরে এবার হুমকি ফোন পাওয়ার দাবি করেছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর অভিযোগ, মাঝরাতে তাঁকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফোনে তাঁকে বলা হয়েছে, “তুই বাঁচবি না, কামারহাটি ঘটনা নিয়ে তুই মুখ খুলেছিস। আমরা তোকে গুলি করে মারব। গুলি খেতে প্রস্তুত থাক।”
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে মদন মিত্র দাবি করেছেন, গত রাতে তাঁকে অচেনা এক নম্বর থেকে ফোন করেছিলেন। পরিষ্কার বাংলায় কথা বলেছিলেন সেই হুমকিদাতা । ওই ফোনে মদন মিত্র কে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় এফআইআর(FIR )দায়ের করতে চলেছেন বলে জানান মদন মিত্র ।
মদন বলেছেন, তিনি ৪৬ সেকেন্ড ধরে এক অপরিচিত ব্যক্তির সাথে কথা বলেছেন। সেই ব্যক্তি যদিও তাঁকে খুনের হুমকি দিয়েছে, মদন তার সাথে সভ্য ভাষায় কথা বলেছেন। মদন জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আপনি কে? এই ভাবে কেন কথা বলছেন?” কিন্তু তিনি কোনো সঠিক উত্তর পাননি। মদন জানিয়েছেন, এই ফোন তাঁর কাছে দুই বার এসেছে, দ্বিতীয় বার ফোনটি এসেছিল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৩৮ মিনিটে। তিনি দাবি করেছেন, রাতেও তাঁর সাথে ওই ব্যক্তির কথা হয়েছে।
মদন জানিয়েছেন, তিনি ফোন কল রেকর্ড করতে পারেননি, যা তাঁর কাছে ব্যর্থতা বলে মনে হয়। তবে তিনি সেই ব্যক্তির সাথে হওয়া কথোপকথন মনে রেখেই বর্ণনা করেছেন। মদনের ভাষায়, “স্পষ্ট বাংলায় আমার সাথে কথা বলা হয়েছে। কোনো বিহারের জেল থেকে, সুবোধ সিংহ বা অর্জুন সিংহের মতো কেউ ফোন করেনি। এটা স্থানীয় কারোর ফোন ছিল। যদিও আমি বুঝতে পারছি যে অর্জুনের মতো কেউ এর পিছনে রয়েছে।”
দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় দাবি করেছেন যে তিনি খুনের হুমকি পেয়েছেন। মদন মিত্র বলেন, “সৌগত রায়কে যেখান থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেই ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। কারণ তাকে ফোন করার পরদিনই আমাকেও ফোন করা হয়েছিল।”
মদন মিত্র আরও জানান যে এই ধরনের হুমকি ফোনে তিনি ভয় পান না। তিনি বলেন, “আমি ভয় পাইনি, কারণ এই ধরনের গুন্ডাদের আমি চিনি। আমি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি না, তবে পুলিশে এফআইআর করব।”
কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেছেন যে তাকে প্রাণের হুমকি দিয়ে ফোন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমার কাছে তথ্য আছে, কামারহাটিতে অর্জুন এবং শুভেন্দু অধিকারী বহু জায়গায় যোগাযোগ করছেন। তাঁরাই এই ফোন করিয়েছেন।”
সম্প্রতি, আড়িয়াদহ অঞ্চলে জয়ন্ত সিংহ নামক এক অপরাধী এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক মহিলা ও তার পুত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জয়ন্ত সহ বেশ কিছু অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে, একটি তিন বছর পুরনো ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে জয়ন্ত ও তার দলবলকে এক মহিলাকে ক্লাবের ভিতরে চ্যাংদোলা করে ঝুলিয়ে লাঠি দিয়ে মারধর করতে দেখা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার জন্য দুই অভিযুক্ত বর্তমানে কারাগারে আছেন। ওই ভিডিওটি ২০২১ সালের।
জয়ন্ত নিয়ে চর্চার মধ্যে সৌগত অভিযোগ জানান যে, আড়িয়াদহ এলাকার দুষ্কৃতী জয়ন্তকে পুলিশের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য কেউ বা কারা তাঁকে হুঁশিয়ারি ভরা ফোন করেছেন। এই বিষয়ে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা বলেন, “সৌগত রায়কে পাওয়া হুমকি ফোনের ঘটনা পুলিশ তদন্ত করছে। এখনও পর্যন্ত কিছু বলার মতো পরিস্থিতি আসেনি, কিন্তু তদন্ত অব্যাহত আছে।” এদিকে, মদন দাবি করেন যে তিনিও হুমকি ফোন পেয়েছেন।