বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশকে দু হাত উপুড় করে টাকা বরাদ্ধ করলো মোদি সরকার।
তৃতীয় বারের মতো কেন্দ্রে সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায়, বিজেপি এবার তাদের মিত্রদের উপর নির্ভর করেছে। এই কারণে, প্রথম থেকেই এটা স্পষ্ট ছিল যে মোদি সরকার তার মিত্র দলগুলির দাবিগুলি পূরণ করবে। এবং সেটা সত্যিই হয়েছে। বিহারে নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপির চিন্তা করে, মোদি সরকার দুই রাজ্যে বিপুল পরিমাণে সাহায্য করেছে। এই দুই প্রধান মিত্র দলের রাজ্যগুলির জন্য, অর্থমন্ত্রী সীতারমণ এক প্রকার কল্পতরুর মতো হয়ে উঠেছেন।
অর্থমন্ত্রী বিহারের বিভিন্ন সড়ক প্রকল্পের জন্য মোট ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের জন্যও বিশেষ আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেন, যেখানে চন্দ্রবাবু নাইডুর রাজ্য চলতি অর্থবর্ষে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কোটি টাকা পাবে। অমরাবতীতে নতুন রাজধানী নির্মাণের জন্য এই বরাদ্দ প্রদান করা হবে। এছাড়া, অন্ধ্রপ্রদেশের গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য ২.৬৬ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে প্রত্যাশিত আসন না পাওয়া সত্ত্বেও, অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন যে বাজেটে এই রাজ্যের জন্য কলকাতা-অমৃতসর বাণিজ্যিক সড়ক নির্মাণ করা হবে। তিনি আরও ঘোষণা করেন যে দেশের পূর্বাঞ্চলের চারটি রাজ্য – পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং বিহারের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এবার ওড়িশার জনগণ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে বিহারে চারটি এক্সপ্রেসওয়ে এবং ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্যও বিহারের জন্য বিশাল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। অপরদিকে, প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই খাতে কোনো বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়নি। কেন্দ্রীয় বাজেটে বিহারের পর্যটন খাতেও বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। হাইওয়ে নির্মাণের জন্য ২৬ হাজার কোটি এবং তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ২১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও বিহারে নতুন বিমানবন্দর এবং মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের ঘোষণা করা হয়েছে। পাটনা-পূর্ণিয়া এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণও কেন্দ্র করবে বলে ঘোষণা করেছেন সীতারমণ।
এই বাজেটে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ইন্ডিয়া জোট থেকে বেরিয়ে নীতীশ আবার এনডিএ-তে ফিরে আসেন। লোকসভার ফলাফল বেরোনোর পর দেখা গেছে, অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নায়ডুর মতো বিহারেও নীতীশের দল জেডিইউ ছাড়া সরকার গঠন করা কঠিন হতো নরেন্দ্র মোদির জন্য। তবে কেন্দ্রীয় সরকারে জেডিইউ কোনো বড় মন্ত্রক পায়নি। নীতীশের বিহারের জন্য ‘বিশেষ স্বীকৃতি’র দাবিও মানা হয়নি কেন্দ্রে। এর ফলে নীতীশকে খুশি রাখার উপায় নিয়ে জল্পনা বাড়ছিল। দাবি পূরণ না হলে নীতীশ কী পদক্ষেপ নেবেন, তা নিয়ে নিশ্চিত নয়। বিরোধীরা মনে করছেন, নীতীশকে সন্তুষ্ট করতে প্রধানমন্ত্রী বাজেটকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন।