বিজেপি পরিষদীয় দল, শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে, ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে বয়কটের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। বিধানসভায় বৃহস্পতিবার ফিরহাদ বিবৃতি দিয়ে বলেন, তিনি কখনও কাউকে আঘাত করতে চাননি এবং ভবিষ্যতেও তা করবেন না। তিনি আরও দাবি করেন, গত ৩ জুলাই একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তার করা মন্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ফিরহাদ বলেন, ‘প্রতিবার আমি উত্তর দেওয়ার জন্য যখন প্রস্তুত হই, তখনই প্রশ্নকর্তা সদস্য চলে যান। আমার কোনও বক্তব্য যদি ভুল ব্যাখ্যা করা হয়, আমি কী করতে পারি? শঙ্কর ঘোষ এবং অন্যান্য যারা আছেন, তারা কি আমাকে ধর্মনিরপেক্ষ মনে করেন, বুকে হাত দিয়ে বলুন।’
শুভেন্দু পুরমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে উত্তর দেন, ‘আপনি যে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন, সেখানে আপনাকে মন্ত্রী এবং মহানাগরিক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আপনার বিশ্বাসের ধর্মের প্রশংসা করা প্রত্যাশিত। আমরাও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এমনটাই করি, এবং এতে কোনও আপত্তি নেই। তবে, আপনি সবাইকে আপনার বিশ্বাসের ধর্মে আহ্বান জানিয়েছেন, যা আমাদের মতে সঠিক নয়।’
শুভেন্দু বলেছেন, ফিরহাদের বক্তব্যের যে অংশ নিয়ে আপত্তি রয়েছে, তা চিহ্নিত করা হলে মন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি যদি দুঃখ প্রকাশ করেন, তাহলে বিষয়টি সেখানেই শেষ হবে।
শুভেন্দুর বক্তব্য শুনে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পুরমন্ত্রীকে একটি বিবৃতি দেওয়ার জন্য বলেন। ফিরহাদ উত্তর দেন, ‘আমি কোনও ধর্মকে সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে আঘাত করার পক্ষপাতী নই। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী হলেও আমি দুর্গাপুজোর আয়োজন করি। শুভেন্দুও সেখানে গিয়েছিলেন। আমার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না কাউকে আঘাত করার। এবং সারা জীবন থাকবেও না।’
বিজেপির বয়কটের পথ থেকে সরে আসায় পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় স্বস্তি অনুভব করেছেন। অধিবেশন শেষে তাঁর নিজের ঘরে তিনি বলেন, ‘সিপিএমের সাথে আমাদের অনেক যুদ্ধ হয়েছে, কিন্তু বিধানসভায় এমন বয়কটের পরিস্থিতি কখনো সৃষ্টি হয়নি। এই ধরনের প্রবণতা খুবই বিপজ্জনক। আমি আনন্দিত যে অধ্যক্ষ স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে এনেছেন। বিরোধী দলের সরকারের সমালোচনা করা স্বাভাবিক, কিন্তু মুখ দেখাদেখি না থাকা উচিত নয়, কারণ ব্যক্তিগত জীবনে আমরা কারো শত্রু নই।’