ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলনে সংকটে হাসিনা সরকার, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর চাইছে সেনাবাহিনী!
বাংলাদেশে শান্তি ফিরে আসার কোনো লক্ষণ নেই। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানিয়েছে। এই দাবির মানে হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বর্তমান আওয়ামি লিগ সরকারের পদত্যাগ এবং ফ্যাসিবাদের অবসান। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসিনা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু আন্দোলনের সমন্বয়করা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। রবিবার থেকে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা পরিবর্তনের পক্ষে মতামত প্রকাশ করেছেন।
সেনাবাহিনী ছাত্র এবং জনগণের উপর কোনো প্রকার শক্তি প্রয়োগ করবে না, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গুলি চালাবে না। সূত্রের খবর , বিরোধী দল বিএনপি সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে ড. মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরিকল্পনা করছে।
শনিবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশে আন্দোলনের নেতারা জোরালো ভাষণ দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, “মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবি জানাচ্ছি।” এদিকে, একই দিনে ঢাকা সেনানিবাসে ঢাকা, মিরপুর ও সাভারের কর্মকর্তাদের সাথে পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। তিনি সেনা আধিকারিকদের বলেন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে দেশজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুঠপাট বাড়বে। তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার হস্তান্তর শান্তিপূর্ণভাবে হওয়া উচিত। সেনাপ্রধানের বৈঠক থেকে বোঝা যায়, বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতন আসন্ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর সেনাবাহিনীর সাহায্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হবে, এবং তার অধীনে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠিত হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ আরও বলেন, “আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে শীঘ্রই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের জন্য সর্বস্তরের নাগরিক, ছাত্রসংগঠন এবং সকল পেশাজীবীদের নিয়ে মোর্চা ঘোষণা করব। আমরা সবার সাথে আলোচনা করে ভবিষ্যত বাংলাদেশের জাতীয় রূপরেখা তুলে ধরব। শুধু শেখ হাসিনা নয়, তাঁর পুরো সরকারকেই পদত্যাগ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা বিলোপের জন্য আমরা একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, যেখানে কোনও ধরনের স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদ আর ফিরে আসতে না পারে।” সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশে গত ১ জুলাই থেকে চলমান আন্দোলনে ১৬ জুলাই সংঘর্ষে ৬ জন এবং পরবর্তী সংঘর্ষে ২১৬ জন নিহত হয়েছেন, এবং অনেকে আহত হয়েছেন।