বিনীত পদত্যাগ করলেই লালবাজারের অবস্থান বিক্ষোভ উঠবে, ঘোষণা জুনিয়র ডাক্তারদের!
লালবাজারের অভিযানে অনড় এবং অনমনীয় জুনিয়র চিকিৎসকরা অবস্থান করছেন। রাত ২ টা ৩০ মিনিটে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের সাথে সিনিয়র ডাক্তাররাও যোগ দিয়েছেন লালবাজার ঘেরাও অবস্থান বিক্ষোভে! ডাক্তারদের দাবী বিনীত গোয়েল পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অবস্থান আন্দোলন চলবেই!
অগস্ট মাস পেরিয়ে সেপ্টেম্বর এসেছে, কিন্তু চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের বিচারের দাবিতে আন্দোলনের তীব্রতা একটুও কমেনি। বরং প্রতিদিন এর তীব্রতা আরও বাড়ছে। দ্রুত বিচারের দাবিতে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। এই প্রতিবাদে রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষ উভয়েই অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে সাধারণ মানুষের সংখ্যা বেশি। সোমবার দুপুর থেকে জুনিয়র চিকিৎসকেরা লালবাজারে অভিযান শুরু করেন, হাতে গোলাপ নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন। তাঁরা বিনীত গোয়েলকে গোলাপ দিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিদায় জানাতে চান। জুনিয়র চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা কোনও সংঘাত ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে পুলিশ কমিশনারের অপসারণ বা পদত্যাগ চান। তাই দুপুর ২টো থেকে প্রতিকী মেরুদণ্ড ও গোলাপ নিয়ে অভিযান চালাচ্ছেন। রাত ১টা পর্যন্ত লালবাজারের রাস্তায় রাত জেগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারি নিয়ে আন্দোলনকারীরা বলেছেন যে এটি সার্বিক আন্দোলনের জয়। তবে আন্দোলন এখনও থামছে না। আন্দোলনকারী চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেন, “সকল আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের প্রতি কুর্নিশ। সন্দীপ গ্রেফতার হলেও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।” এছাড়াও, আন্দোলনকারীরা পুলিশকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, “আমরা দায়িত্ব সহকারে বলছি, কোথাও কোনো অশান্তি হবে না, কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না।”
৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটার পর, তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সিবিআই তদন্তের ভার নেওয়ার পর, ১৫ অগস্ট সন্দীপকে প্রথমবার ডাকা হয়েছিল, কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি। পরের দিন তিনি সিবিআইয়ের গাড়িতে সল্টলেকের রাস্তা থেকে উঠেছিলেন। ২৪ অগস্ট পর্যন্ত তাঁকে টানা ৯ দিন সিজিওতে ডাকা হয়, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা সিবিআই দফতরে থাকতে হয়। সোমবার তিনি আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন। সন্দীপের সাথে আরও তিনজন গ্রেফতার হন, যাদের মধ্যে হাওড়ার সাঁকরাইলের বিপ্লব সিংহ রয়েছেন, যার সংস্থা ‘মা তারা ট্রেডার্স’ হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করত। গত সপ্তাহে সিবিআই তাঁর বাড়ি ও সংস্থার অফিসে হানা দিয়েছিল, এবং সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন আফসর আলি। তিনি সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষী। অভিযোগ, ধৃত তিন জনকে বেআইনি ভাবে হাসপাতালে ক্যাফেটেরিয়া, পার্কিং লট-সহ নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন সন্দীপ।