জুনিয়র ডাক্তারদের চাপে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দূর্নীতিবাজ ডিন ও সহকারী ডিনের ইস্তফা !
রাজ্য-রাজনীতিতে আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে চলছে তোলপাড়। বিচারের দাবিতে বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্ষোভ জারি আছে। দুর্নীতির অভিযোগে কিছু জায়গায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত। এবার ছাত্রছাত্রীদের অবিরাম আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত ও সহকারী ডিন সুদীপ্ত শীল।
দীর্ঘকাল ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও ডিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসছিল। বুধবার সকাল থেকে পড়ুয়ারা সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং ডিনের পদত্যাগের দাবিও জানান। পড়ুয়াদের সাথে বিক্ষোভে যোগ দেন জুনিয়র ডাক্তার এবং বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। তাঁরা দাবি করেন, এই ধরনের দুর্নীতির ফলে এক জুনিয়র ডাক্তারকে মৃত্যুর মুখে পড়তে হয়েছে, এবং এই ‘থ্রেট কালচার’ বা দুর্নীতি ডিনের মাধ্যমে মেডিক্যাল কলেজেও ছড়িয়ে পড়েছে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন যে এখানে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নির্দেশে কাজ হয়। যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা তাদের কথা মেনে চলে, তাদেরকে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হয়। অধ্যক্ষ বলেছেন, “এই সব বিষয় বিচারাধীন।” ছাত্রছাত্রীরা ডিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে, অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেন। নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, “পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়েছে এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনের সাহায্য নেবে। অন্যদিকে, ডিন সন্দীপ সেনগুপ্তের দোষী কিনা তা নিয়ে তদন্ত কমিটি আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবে।”
যদিও পড়ুয়ারা অধ্যক্ষের সব সিদ্ধান্তের সাথে একমত ছিল, তবুও তারা ডিনের পদত্যাগের দাবিতে অনড় ছিল। সন্ধ্যা থেকে ডিনের কার্যালয়ে ঢুকে পদত্যাগের দাবিতে অবিরাম বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে কিছু পড়ুয়া। তাদের সঙ্গে কিছু অধ্যাপকও সমর্থন জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত, পড়ুয়াদের চাপের মুখে ডিন এবং সহকারী ডিন নিজেদের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
ডিন সন্দীপ বলেন, “আমি নিজেও একদিন ছাত্র ছিলাম, তাই ছাত্রদের মানসিকতা আমি বুঝি এবং শ্রদ্ধা করি। পরীক্ষক হিসেবে আমি কখনও কঠোর দায়িত্ব পালন করিনি, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আমাকে কঠোর হতে হয়েছে। আমার দায়িত্বকালে অনেককে সঠিক দায়িত্ব পালন না করার জন্য বহিষ্কার করেছি। ছাত্রদের সাফল্য কামনা করি। কোনও দায়ভার না নিয়ে, কিন্তু ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে আমি আমার পদ থেকে পদত্যাগ করছি।”