‘ধর্ষক সন্দীপের ফাঁসি চাই’,চড়ের পর এবার সন্দীপ ঘোষের দিকে এবার ছুঁড়ে মারা হল জুতো।
চড়ের পর এবার জুতো নিক্ষেপ। সন্দীপ ঘোষের দিকে এবার ছুঁড়ে মারা হল জুতো। আদালত থেকে বের করে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় সন্দীপ ঘোষের উদ্দেশে ছুঁড়ে মারা হয় জুতো! তার সাথে সন্দীপ ঘোষকে ঘিরে ‘চোর, চোর’ স্লোগান ওঠে। আরজি করের দুর্নীতির জন্য গ্রেফতার হওয়া সন্দীপ ঘোষকে কেন্দ্র করে মহিলা আইনজীবীরা প্রতিবাদ জানান।
মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে বিচারকের নির্দেশে সন্দীপ সহ চারজনকে সশরীরে হাজির করা হয়। আরজি কর হাসপাতালের দুর্নীতির মামলায় সন্দীপ, সুমন হাজরা, বিপ্লব সিংহ, এবং আফসর আলিকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বিচারক এজলাস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই’ স্লোগান শুরু হয়। বিচারের দাবিতে অনেকে স্লোগান দেন, বিশেষ করে মহিলা আইনজীবীরা সন্দীপের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। কেউ কেউ সন্দীপকে ‘ধর্ষক’ বলে চিৎকার করেন এবং তার ফাঁসির দাবি করেন। একজন সন্দীপের দাঁত ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন এবং বলেন, “অপরাধী হাসতে পারে না, দাঁত ভেঙে দেব।” অন্য একজন বলেন, “জেলের ভাত কেন খাবে? সরকারের খরচ হবে।”
এভাবে আদালত কক্ষে সন্দীপের উদ্দেশে একের পর এক স্লোগান ওঠা শুরু হয়। এক মহিলা চিৎকার করে জিজ্ঞাসা করেন, “তোমার বডিগার্ড কোথায়?” উল্লেখ্য, আরজি কর দুর্নীতি মামলায় সন্দীপের নিরাপত্তা রক্ষী আফসরকেও গ্রেফতার করা হয়। তাকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়। সন্দীপ এবং আফসরকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে একজন বলে উঠেন, “সন্দীপ ঘোষকে জুতো মার!” কোলাহলের মধ্যে বিচারক আদালত কক্ষে ফিরে আসেন এবং হাত জোড় করে নীরবতা অনুরোধ করেন, “বাইরে করুন, এখানে নয়।” তিনি আরও জানান, শারীরিকভাবে কাউকে হেনস্থা করা যাবে না। বিক্ষোভকারী আইনজীবীরা তখন বলেন, “আমরা গায়ে হাত তুলব না, কিন্তু বাইরে কেউ কিছু করলে আমরা জানি না।”
পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আদালত চত্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে দিয়ে সন্দীপকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে গাড়িতে তোলা হয়। এই সময়ে বাইরে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। ‘হায় হায়’ স্লোগান ওঠে। পুলিশের গাড়িতে সন্দীপকে তোলার সময়, হঠাৎ সেই গাড়ির দিকে জুতো ছোঁড়া হয়। শেষ পর্যন্ত সন্দীপকে আদালত চত্বর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আদালত চত্বরে তখনও বিক্ষোভ চলছিল। মহিলা আইনজীবীরা স্লোগান তুলতে থাকেন। আইনজীবী সিমন দাস বলেন, “ধর্ষকের জন্য কেন এত বিশেষ নিরাপত্তা? আমাদের প্রতিবাদের জন্য আমাদের আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।” অন্য আইনজীবী ইশা পাল বলেন, “বিচারকেরা যে দরজা দিয়ে যাতায়াত করেন, সেই পথ দিয়েই সন্দীপকে বের করা হয়েছে। এই বিশেষ ব্যবস্থা কেন?”
গত দিনের অব্যবস্থাপন্ন পরিস্থিতি মাথায় রেখে, মঙ্গলবার সন্দীপদের জন্য ভার্চুয়াল শুনানির আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। কিন্তু আলিপুর আদালত সেই আবেদন নাকচ করে দেয়। মঙ্গলবারে সন্দীপকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত করা হয়, এবং শুনানি শেষে আদালত চত্বরে পূর্বের দিনের অনুরূপ পরিস্থিতি দেখা যায়।