প্রায় ৪২ দিনের কর্মবিরতির পর, জুনিয়র ডাক্তাররা অবশেষে তাদের ধর্মঘট আংশিকভাবে প্রত্যাহার করেছেন। এই সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার জেনারেল বডির বৈঠকে নেওয়া হয়। ৯ অগস্ট থেকে, এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ঘটনার পর থেকে তারা কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। গত নয় দিন ধরে সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে তাদের ধর্না চলছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। তারা আপাতত কর্মবিরতি আংশিকভাবে তুলে নিয়েছেন, কিন্তু আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তাররা একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। তারা জানিয়েছেন যে, শুক্রবার থেকে তাদের কর্মবিরতি আংশিকভাবে প্রত্যাহার করা হবে এবং ধর্নামঞ্চ সরানো হবে। বিকেল তিনটের সময় ধর্নামঞ্চ থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের একটি মিছিল হবে, যার মাধ্যমে তারা তাদের অবস্থান প্রত্যাহার করবে। শনিবার থেকে তারা বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি পরিষেবায় যোগ দেবেন।
দেবাশিস হালদার প্রতিবাদীদের পক্ষ থেকে বলেন, “আমরা শুক্রবারের মিছিল শেষে নিজেদের কলেজে ফিরে বিভাগভিত্তিক SOP তৈরি করব। যেসব জায়গায় অত্যন্ত প্রয়োজন, সেগুলো চিহ্নিত করা হবে। কেবল সেই জরুরি জায়গাগুলোতেই আমরা কাজে যোগ দেব, বাকি স্থানগুলোতে আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজন হলে আমরা পূর্ণ কর্মবিরতিতেও ফিরে যেতে পারি।”
জুনিয়র ডাক্তাররা যে দাবিগুলি নিয়ে রাজ্য সরকারের সাথে বারবার বৈঠক করেছেন, তার মধ্যে অনেকগুলি দাবি ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে। তবে এখনও কিছু দাবি পূরণ হয়নি। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং স্বাস্থ্য কর্তাদের অপসারণকে তারা জয় হিসেবে দেখছেন, আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারিকেও তারা আন্দোলনের সাফল্য হিসেবে মনে করছেন। তবে তারা বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
হাসপাতালে চিকিৎসকদের এবং চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে চিকিৎসকের উপর হামলা ও হত্যার বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন করছিলেন। বুধবার এই দাবিগুলি নিয়ে নবান্নে মুখ্যসচিবের সাথে তাদের বৈঠক হয়েছিল। বৈঠক শেষে ডাক্তাররা হতাশ হয়েছিলেন, কারণ মুখ্যসচিব বৈঠকের কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষর করেননি। পরের দিন, মুখ্যসচিব স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে একটি চিঠি পাঠান, যেখানে রাজ্য সরকার হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলির বিবরণ দেন। এরপর জুনিয়র ডাক্তাররা তাদের সিদ্ধান্ত জানান।