বাংলাদেশে অশান্তির মাঝে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যাকাণ্ডে দোষীদের শাস্তি ও চিন্ময়প্রভুর নিঃশর্ত মুক্তির দাবী শেখ হাসিনার!
চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যু ঘটেছে, যার প্রতিবাদে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরব হয়েছেন। সংখ্যালঘু সংগঠনের নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে এই মৃত্যু ঘটে। অভিযোগ উঠেছে যে, আইনজীবীকে খুন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে আইনজীবীর ‘হত্যা’র প্রতিবাদ করেছেন এবং বলেছেন যে, এই ঘটনা মানবাধিকারের ‘চরম লঙ্ঘন’। তিনি আইনজীবী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে তিনি চিন্ময়ের মুক্তির দাবিও করেছেন। সমাজমাধ্যমে হাসিনার দল তাঁর বিবৃতি প্রচার করেছে, যেখানে তিনি বলেছেন, “সনাতন ধর্মাবলম্বী এক শীর্ষনেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত।”
বাংলাদেশ পুলিশ চিন্ময়কে আটক করার পর থেকে তার অনুসারীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। গত মঙ্গলবার, চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে চিন্ময়ের অনুসারীরা জড়ো হন। সেদিন তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর, তাকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় তার অনুসারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। ‘প্রথম আলো’ অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত ১০ পুলিশ সদস্যসহ ৩৭ জন আহত হন, এবং একজন আইনজীবীর মৃত্যু ঘটে।
হাসিনা এক বিবৃতিতে বলেছেন, “একজন আইনজীবী তার পেশাগত কর্তব্য পালনের সময় আক্রান্ত হয়েছিলেন। যারা তাকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে, তারা সন্ত্রাসী। তারা যেই হোক না কেন, তাদের শাস্তি পাওয়া উচিত।” তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তদের শাস্তি না দিলে দায় বর্তাবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর। পদ্মাপারের মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে হিংসা ও অশান্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সব ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্বের কথাও বলেছেন তার বিবৃতিতে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিবৃতিঃ
চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে, এই হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে দ্রুত শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। একজন… pic.twitter.com/b7yjlyj9Et
— Awami League (@albd1971) November 28, 2024
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবং শেখ হাসিনার ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকে, দেশটিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে, বাংলাদেশের কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন একত্রিত হয়ে ‘সনাতনী জাগরণ মঞ্চ’ গঠন করে। চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে এই মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র নির্বাচিত করা হয়। তাঁর আহ্বানে, ঢাকার শহিদ মিনার এবং চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার সংখ্যালঘু মানুষ জমায়েত হন। এই পরিস্থিতিতে, এক স্থানীয় বিএনপি নেতা চিন্ময়ের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি চিন্ময় গ্রেফতার হন।