রেশন মামলায় ইডি প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দুর্নীতির ‘কিংপিন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। মন্ত্রীর পদ না থাকলেও, তিনি এখনও ক্ষমতাশালী বলে আদালতে কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি। জ্যোতিপ্রিয়ের ক্ষমতার প্রমাণ হিসেবে তাঁকে ‘কিংমেকার’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ইডির মতে, জ্যোতিপ্রিয়ের জামিন পাওয়া গোটা তদন্তপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
বুধবার বিচারভবনে জ্যোতিপ্রিয়ের জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নভেম্বর মাস থেকে এই শুনানি চলছে। জ্যোতিপ্রিয়ের আইনজীবীরা আগেই ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব নাকচ করেছেন। বুধবার, ইডি তাঁর জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, দুর্নীতির মূল হোতা জ্যোতিপ্রিয় নিজেই। এই মামলায় যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তারা সকলেই প্রাক্তন মন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করেছেন। গ্রেফতারের অনেক দিন পরেও তাঁর প্রভাব অক্ষুণ্ণ রয়েছে। ইডির দাবি, রাজনৈতিকভাবে জ্যোতিপ্রিয় এখনও প্রভাব প্রয়োগ করতে পারেন। তাঁর কাছে ‘রাজা না হলেও রাজা তৈরি করার ক্ষমতা’ আছে, আদালতে ইডির আইনজীবী মন্তব্য করেন।
বিচারক জ্যোতিপ্রিয়ের প্রভাবশালী তকমা নিয়ে প্রশ্ন করেন, “তিনি এখন মন্ত্রী নন, তাহলে কীভাবে প্রভাব খাটাবেন?” ইডির উত্তর ছিল, “কেউ রাজা হন, কেউ রাজা গড়ার কারিগর। এমন মামলাও আছে যেখানে দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদন মিলছে না। রাজা গড়ার কারিগররা আসলে খুবই ক্ষমতাশালী। জ্যোতিপ্রিয় জামিন পেলে তিনি সম্পূর্ণ মামলাটিকে প্রভাবিত করতে পারেন।”
এই প্রসঙ্গে, এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে একটি ঘটনা উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর, রেশন মামলায় জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করা হয় ইডির দ্বারা। গ্রেফতারের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এসএসকেএম হাসপাতালে কয়েক দিন ভর্তি ছিলেন। সেই সময়, ইডি একটি চিরকুট উদ্ধার করে যেটি জ্যোতিপ্রিয় তার মেয়েকে হাসপাতাল থেকে লিখেছিলেন। ইডির দাবি অনুযায়ী, সেই চিঠিতে টাকার লেনদেন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ছিল। বুধবার আদালতে ইডির আইনজীবীরা উল্লেখ করেন, “জ্যোতিপ্রিয় যে কী করতে পারেন সেই সুযোগ পেলে, তা আমরা পিজি হাসপাতালের চিরকুটের ঘটনা থেকেই দেখতে পেয়েছি।”
আগামী ২১ ডিসেম্বর বিচার ভবনে আবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।