আমেরিকার আর্থিক সাহায্য সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ায় বিপদে পড়েছে পাকিস্তান। দেশের একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্প টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় কখন সাহায্য চালু করবেন, সেই অপেক্ষায় দিন গুনছে ইসলামাবাদ। ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, আর্থিক উন্নয়নমূলক বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম।
সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের জন্য বরাদ্দ আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) আর্থিক্য বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। আপাতত ৯০ দিনের জন্য ওই সমস্ত আর্থ সাহায্য বন্ধ থাকবে। ইউএসএইড ‘রিভিউ’ বা পর্যালোচনা করবেন ট্রাম্প, জানিয়েছেন আমেরিকার স্টেট দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। পর্যালোচনার পর ওই সমস্ত আর্থিক সাহায্য চালিয়ে যাওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের পাশাপাশি কোপ পড়েছে বাংলাদেশের উপরেও। তবে ভারতে আমেরিকার্থ সাহায্য বন্ধ হবে কি না, এখনও স্পষ্ট নয়। সর্ব ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে নয়াদিল্লির আমেরিকান দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন , ভারত সাহায্য দেওয়া ‘পর্যালোচনা করছে আমেরিকা। এখনও সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
ইউএসএইডের মাধ্যমে পাকিস্তানে এএফসিপি (অ্যাম্বাস্যাডর্স ফান্ড ফর কালচারাল প্রিজ়ারভেশন) প্রকল্প পরিচালিত হতো। এর মাধ্যমে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করা হতো। পাকিস্তানের যাবতীয় ঐতিহাসিক এবং ঐতিহবাহী ভবন, প্রত্নতাত্ত্ব স্থান এবং সংগ্রহশালা সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রচলিত এএফসিপি প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেলো ।
পাকিস্তানের বিদ্যৎ সংক্রান্ত মোট পাঁচটি প্রকল্প ইউএসএইড-এর ভরসায় চলছিল। পাওয়ার সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাকটিভিটি, পাকিস্তান প্রাইভেট সেক্টর এনার্জি অ্যাক্টিভিটি, এনার্জি সেক্টর অ্যাডভাইসরি সার্ভিসেস প্রজেক্ট, ক্লিন এনার্জি লোন পোর্টফোলিয়ো গ্যারান্টি প্রোগ্রাম এবং পাকিস্তান ক্লাইমেট ফাইনান্সিং অ্যাকটিভিটি— এই পাঁচটি প্রকল্প আপাতত বন্ধ হয়ে গেছে।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চার প্রকল্প আমেরিকার সিদ্ধান্তের প্রভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি প্রকল্প ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের মতে, দেশের স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ, বন্যা এবং শিক্ষা সংক্রান্ত আরও কিছু প্রকল্পের কাজও থমকে গেছে।ারা আশঙ্কা করছেন, এর মধ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে বিপদ আরও বাড়তে পারে। তবে ইউএসএইড বন্ধ হওয়ার ফলে পাকিস্তানে মোট কত টাকার ক্ষতি হয়েছে, এখনো স্পষ্ট নয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্য, বিভিন্ন দেশে আমেরিকা অর্থসাহায্য করবে বটে। কিন্তু সেগুলি আমেরিকার সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত করবে, আমেরিকাকে কতটা শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ করে তুলবে, এবার থেকে তা-ও বিবেচ করা হবে। সেই কারণেই পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।