বাংলাদেশে ভারত বিরোধিতার ঢেউ উঠেছে চরমে । এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। তারা ঢাকার সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক গড়ে তুলতে মরিয়া। পাকিস্তানের সঙ্গে দহরম মহরম বাড়িয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসও। এমনকি কয়েকদিন আগে ঢাকা সফরে গিয়েছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের (ISI) প্রতিনিধি দল। যা নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে দিল্লি। হুঁশিয়ারি দিয়ে বিদেশ মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়ে দিয়েছে, গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
এক সময় ‘ভারতবন্ধু’ হিসাবেই পরিচিত ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেখ হাসিনার পতন ও রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই সম্পর্ক যেন বদলে যাচ্ছে। একাত্তরের গণহত্যা ভুলে ইউনুসের ‘নতুন’ বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানকে কাছে টানছে। সম্প্রতি ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের সেনাকর্তারা। এরপর গত ২১ জানুয়ারি সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, পাকিস্তানের চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের সেনা প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌঁছেছে। সেই দলে রয়েছেন আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম এবং আরেকজন অফিসার বাংলাদেশের সেনা অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তাঁরা। তবে এই গোপন সাক্ষাতের বিষয়ে মুখতে নারাজ দুই দেশই।

কিন্তু বাংলাদেশ-পাকিস্তানের এই ‘আঁতাত’ মোটেই হালকাভাবে নিচ্ছে না ভারত। দুই পড়শি দেশের এই পারস্পরিক প্রীতি নিয়ে শুক্রবার প্রশ্ন করা হয় বিদেশমন্ত্র মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে। উত্তরেুঁশিয়ারি সুরে তিনি জানান, “আমাদের দেশের চারপাশে কী হচ্ছে আমরা সব সময় নজরে রাখি। পড়শি দেশে যা হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কেও আমরা অবগত। আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা তৈরি হলেোজনে যেকোনও পদক্ষেপ করা হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, কার্যত জামাত-ই-ইসলামী পরিচালিত ইউনুস সরকারেরমান নীতিই হল ভারত বিরোধিতা। এতদিনে তা জানতে বাকি নেই ইসলামাবাদেরও। ফলে তারাও ভারতের বিরোধিতায় এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। পুরনো রাগ মেটাতে উঠে পড়ে লেগেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশে গাজীপুরের সমরাস্ত্র নির্মাণের কারখানায় তাদের ‘শাহীন’ সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের হাতে পাকিস্তানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকলে পূর্ব ও পশ্চিম— দুই সীমান্তেই চাপে থাকবে ভারত। সব মিলিয়ে দিল্লির উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
হাসিনাহীন বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাড়িয়ে তুলেছে আনসারুল্লা বাংলা টিম (ABT )। এদের যোগাযোগ রয়েছে বিভিন্ন পাক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে। আল কায়দার এই ছায়া সংগঠনটি এখন ভারতকে রক্তাক্ত করার ছক কষছে। ভারতজুড়ে স্লিপার সেল তৈরির পরিকল্পনা করছে। তরুণ প্রজন্মের মগজ ধোলাই করে জেহাদের বিষ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে জঙ্গিরা। সবটাই হচ্ছে মোহাম্মদ ফারহান ইসরাক এর নেতৃত্বে এই ইসরাক আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান জসীমউদ্দিন রহমানির খুব কাছের সহযোগী। প্রসঙ্গত, পরিবর্তনের বাংলাদেশে সম্প্রতি এই রহমানিকেই জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে ইউনুস সরকার।